বরই এর উপকারিতা - বরই এর অপকারিতা - বরই এর বৈজ্ঞানিক নাম
প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্ট টি পড়ে আপনারা জানতে পারবেন বরই এর উপকারিতা এবং বরই এর অপকারিতা সম্পর্কে।অনেকেই আছেন যারা বরই এর উপকারিতা এবং বরই এর অপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত নন তাদের সুবিধার্থে আমরা আলোচনা করব বরই এর উপকারিতা এবং বরই এর অপকারিতা নিয়ে। এছাড়াও এই পোষ্টটি পড়ে আরো জানতে পারবেন বরই এর বৈজ্ঞানিক নাম, বরই এর পুষ্টিগুন, বরই এর ইংরেজি নাম , বরই এর জাত সম্পর্কে।
তাহলে চলুন আর দেরী না করে জেনে নেই, বরই এর বৈজ্ঞানিক নাম, বরই এর ইংরেজি নাম, বরই এর জাত, বরই এর পুষ্টিগুন, বরই এর উপকারিতা, বরই এর অপকারিতা সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ বরই এর উপকারিতা - বরই এর অপকারিতা - বরই এর বৈজ্ঞানিক নাম
- বরই এর বৈজ্ঞানিক নাম
- বরই এর ইংরেজি নাম
- বরই এর জাত
- বরই এর পুষ্টিগুন
- বরই এর উপকারিতা
- বরই এর অপকারিতা
- শেষ কথাঃ | বরই এর উপকারিতা | বরই এর অপকারিতা | বরই এর বৈজ্ঞানিক নাম
বরই এর বৈজ্ঞানিক নাম
আমরা এখন যেনে নেব বরই এর বৈজ্ঞানিক নাম কি সেই সম্পর্কে। বরই কে অনেকেই কুল নামে অভিহিত করেন।আন্তর্জাতিকভাবে কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতি মেনে জীব/প্রাণীর নাম নির্ধারণ করাকেই বৈজ্ঞানিক নাম বলে। অর্থাৎ বৈজ্ঞানিক নামের মাধ্যমে আমরা এই বিশ্বের সকল প্রাণীকুলকে খুব সহজেই জানতে পারি। বৈজ্ঞানিক নাম অবশ্যই ইংরেজি অথবা ল্যাটিন ভাষায় লিখতে হয়। বরই এর বৈজ্ঞানিক নাম Ziziphus mauritiana.
আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন বৈজ্ঞানিক নাম কিভাবে লেখা হয় এবং বরই এর বৈজ্ঞানিক নাম কি সেই সম্পর্কে।
বরই এর ইংরেজি নাম
আমরা এখন জেনে নেব বরই এর ইংরেজি নাম সম্পর্কে। আমাদের দেশের সবাই বড়ই কে "কুল" নামে অভিহিত করেন । বরই এর ইংরেজি নাম হলো "plum"
বরই এর জাত
আমাদের দেশে বরই এর জাত রয়েছে অনেক।আমাদের দেশে বেশ কিছু জাত আবহাওয়া অনুযায়ী এবং বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ভালো এমন জাত আবিষ্কৃত হয়েছে। এছাড়াও বরই আগে আগেই বাজারে আসবে এমন কিছু জাত রয়েছে। নিচে কয়েকটি বরই এর জাত উল্লেখ করা হলোঃ
আরো পড়ুনঃ লিচু খাওয়ার ৫ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।
বরই এর জাতঃ
- দেশি টক বরই
- নারকেল বরই
- কাশ্মীরি আপেল কুল
- বাউ কুল ( বাউ কুল ১ , বাউ কুল ২ )
- থাই কুল
- বারি কুল ১
- বারি কুল ২
- বারি কুল ৩
- বল সুন্দরী
- কলম বরই
বরই এর পুষ্টিগুন
আমরা এখন দেখে নেব বরই এর পুষ্টিগুন গুলো। বরই এর পুষ্টিগুন রয়েছে অনেক। বরই বিভিন্ন খনিজ দ্রব্য এবং ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-সি এর একটি অন্যতম উৎস।তাছাড়া খনিজ পদার্থ, শর্করা, খাদ্য শক্তি, ফসফরাস রয়েছে।
বরইয়ে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে তা আমাদের শরীরের ভিটামিনের অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। কেউ যদি প্রতিদিন ১০০ গ্রাম বরই খাই তাহলে সেই ব্যক্তি ৭৭ শতাংশ ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করতে পারবে। সুতরাং যারা প্রতিদিন বড়ই খাবে তারা তার প্রতিদিনের চাহিদা যতটুকু ভিটামিন-সি প্রয়োজন তা পূরণ করতে পারবে ।
আরো পড়ুনঃ লিচু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
এছাড়াও বরইয়ে রয়েছে ভিটামিন এ ও বি কমপ্লেক্স। প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থেরও ভালো উৎস বরই। এতে আছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন ও ফসফরাস। এই ক্যালসিয়াম আমাদের দাঁত ও হাড় ভালো রাখে। এর পটাশিয়াম আমাদের শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। এর পাশাপাশি এই ফলের ক্যালরির মাত্রা কম। সুতরাং আমরা বুঝতে পারছি বরই এর পুষ্টিগুন রয়েছে কত।
বরই এর উপকারিতা
আমরা এখন বরই এর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেব।বরই এর উপকারিতা রয়েছে অনেক। উপরে আমরা দেখেছি বরই এর পুষ্টিগুন কত। বরই এর উপকারিতা গুলো নিচে আলোচনা করা হলো।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ
বরই এর উপকারিতা গুলোর মধ্যে প্রথমটি হলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।বরই তে রয়েছে ভিটামিন সি, যা সংক্রামক রোগ এবং বিভিন্ন ঘা হওয়া থেকে শরীরকে রক্ষা করে। আমরা জানি ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়াও বরইতে ভিটামিন ও এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মৌসুমি অসুখ যেমনঃ জ্বর, সর্দি, কাশি থেকেও দেহকে সুরক্ষা প্রদান করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেঃ
বরই এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা টিউমারের উপর সাইটোটক্সিক প্রভাব বিস্তার করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন যার ফলে শরীরে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখতেঃ
বড়ই এ রয়েছে বিভিন্ন খনিজ উপাদান যেমন আয়রন ও ফসফরাস আয়রন ও ফসফরাস শরীরে রক্ত উৎপাদন এবং রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করে।
রক্ত পরিশুদ্ধ করতেঃ
বরই রক্তকে পরিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে।বরই মৌসুম অনুযায়ী শেষ হয়। তবে শুকনো করে অনেকদিন সংরক্ষণ করে রাখা যায়। রক্ত পরিশুদ্ধি রাখার জন্য শুকনো বরই খাওয়া উচিত। শুকনো বরই এর মধ্যে স্যাপোনিন, অ্যাল্কালয়েড এবং ট্রাইটারপেনয়েড উপাদান থাকে যা রক্ত পরিশুদ্ধ করতে সহায়তা করে।
বড়ই হজমে সহায়তা করেঃ
বরইয়ে খাবার পরিপাকে সহায়ক এনজাইমের উপস্থিতি রয়েছে। এর ফলে বরই খাবার হজম করতে সাহায্য করে। তবে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে বরই খেলে তা ভরা পেটে খেতে হবে তাহলে সেই বড়ই খাবার হজমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
হাড় মজবুত করতে সহায়তা করেঃ
মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাড়ের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে ক্যালসিয়াম এর অভাব দেখা যায়।হাড়ের গঠন মজবুত রাখার জন্য ক্যালসিয়াম এর প্রয়োজন। বরইয়ে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, আরো অনেক ভিটামিন সাথে মিনারেল। যা হাড়কে মজবুত ও শক্ত করতে সাহায্য করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ
বরই এর উপকারিতা গুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল হৃদরোগের সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে বরইয়ের কার্যকারিতা অনেক। শরীরের প্রদাহ কমানোর জন্য প্রয়োজন ফাইটোকেমিকেল যা বড়ই রয়েছে। এর ফলে হৃদ রোগের ঝুকি কমে যায়। এবং বরই হার্ট এর অন্যান্য অসুখ হওয়ার থেকেও আমাদের রক্ষা করে।
ব্রেইনকে সচল ও অধিক একটিভ করে তোলেঃ
বড়ইয়ের অধিকতর পলিফেনোল পদার্থ ব্রেইনকে কার্যকর করতে সাহায্য করে। এবং এর ফলে দেহের কগনিটিভ ফাংশন এর উন্নতি সাধন হয়।
অনিদ্রা থেকে মুক্তিঃ
বরই খেলে ইনসোমনিয়া এবং অনিদ্রা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এর মধ্যে থাকা শক্তিশালী ক্যামিক্যাল ব্রেইনকে শান্তি প্রদান করে, যার ফলে ভালো ঘুম হয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতেঃ
বরই ক্যালরির মাত্রা অনেক কম এর পাশাপাশি ফ্যাট এর মাত্রা নাই বললেই চলে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়া বন্ধ করে। তবে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য বড়ইয়ের ভূমিকা রয়েছে। বরইয়ে ক্যালরির মাত্রা কম থাকার ফলে ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে।
আশা করি আপনারা বরই এর উপকারিতা গুলো বুঝতে পেরেছেন। বরই এর সময় আপনারা নিয়মিত বরই খেলে উপরিউক্ত উপকারিতা গুলো আপনারা পেতে পারেন।
বরই এর অপকারিতা
বরই এর উপকারিতা যেমন রয়েছে তেমন বেশ কিছু বরই এর অপকারিতাও রয়েছে। এখন আমরা জেনে নেব বরই এর অপকারিতা গুলো সম্পর্কে।
- বরই একটি টক জাতীয় ফল।বরই এর অপকারিতা গুলোর মধ্যে একটি হলো মিষ্টি বরই বা টক বরই সব বরইতেই রয়েছে কিছু পরিমাণ অ্যাসিড। বরই টক জাতীয় ফল হাওয়ায় এটি খালি পেটে খাওয়া উচিত নয় তাছাড়া গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
- আমাদের শরীরের জন্য যে কোন কিছু পরিমিত পরিমাণে খাওয়া ভালো। পরিমাণের চেয়ে বেশি খেয়ে নিলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। ঠিক একইভাবে বরই বেশি পরিমাণে খেয়ে নিলে পেট ফুলে যেতে পারে। এর ফলে একজন ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন।
বরই এর অপকারিতা খুব বেশি নয়। উপরিউক্ত দুটি নিয়ম মেনে চললেই আপনি নিয়মিত বরই খেতে পারবেন।
শেষ কথাঃ | বরই এর উপকারিতা | বরই এর অপকারিতা | বরই এর বৈজ্ঞানিক নাম
প্রিয় পাঠক আমরা এই পোস্টের একদম শেষ দিকে চলে এসেছি। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা বরই খুব বেশি আগ্রহ সহ খান না কারণ তারা বরই এর উপকারিতা সম্পর্কে খুব বেশি অবগত নয়। তাদের সুবিধার্থে আজকের এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করেছি বরই এর বৈজ্ঞানিক নাম, বরই এর ইংরেজি নাম, বরই এর জাত, বরই এর পুষ্টিগুন, বরই এর উপকারিতা, বরই এর অপকারিতা সম্পর্কে যেন একজন পাঠক এই একটি পোষ্ট পড়ে বরই সম্পর্কে পুরোপুরি তথ্য পেয়ে যান।
আরো পড়ুনঃ খেজুর খাওয়ার ১৮টি উপকারিতা জেনে নিন
পোষ্ট টি আপনার কাছে উপকারী মনে হলে শেয়ার করুন আপনার আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবদের সাথে নিজের শেয়ার বাটনগুলো তে ক্লিক করে যেন তারা এই পোস্টটি পড়ে বরই এর উপকারিতা, বরই এর অপকারিতা, বরই এর বৈজ্ঞানিক নাম সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন খুব সহজেই। ১৬৮২১
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url