OrdinaryITPostAd

ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করবো। মরুভূমির সুমিষ্ট ও রসালো ফল ত্বীনঅত্যন্ত রসালো ঔষুধী গুণসম্পন্ন সুস্বাদু এই ফলটির নামে পবিত্র কুরআনে সুরা রয়েছে। ত্বীন ফলকে জান্নাতি ফল বলা হয়ে থাকে। সর্বাধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন অত্যন্ত সুস্বাদু ও রসালো এই ফলটি বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। আসুন জেনে নেই, এই বরকতময় ফলের গুনাগুন, ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

ত্বীন ফল খাওয়ার ১৪ টি উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

বন্ধুরা, নিশ্চয়ই আপনারা ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন ? আজকে ভোরের আলো আইটির পক্ষ থেকে আপনাদের ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ উপাদান সম্পর্কে জানাবো ।

ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা 'উপস্থাপনা'

 ত্বীন আরবি শব্দ যার অর্থ হলো আনজির। বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষায় যাকে ডুমুর বলা হয়। তবে আমাদের দেশে যে সকল ডুমুর দেখা যায় সেগুলো কুরআনে উল্লেখ করা ত্বীন ফল নয়। মধ্যপ্রাচ্য, পর্তুগাল, পর্তুগাল, মরক্কো, এবং পশ্চিম এশিয়াতে অধিক পরিমাণে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় এই ফল। 

বিজ্ঞানীরা পবিত্র কুরআন শরীফে গবেষনার মাধ্যমে এই ফলের অসাধারণ গুনাগুন সম্পর্কে আবিষ্কার করেছেন। ত্বীন ফলের গুনাগুন সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। অত্যন্ত খুশির সংবাদ হলো মধ্যপ্রাচ্যের এই ফল বর্তমানে বাংলাদেশের চাষ করা হচ্ছে। ত্বীন ফল পাকা অবস্থায় লাল,  খইরি, হলুদ, সবুজ ও গোলাপি রঙের হয়ে থাকে। তাছাড়া এই ফল পাকলে খালি খাওয়া যায় আবার জ্যাম, জেলি ও বা মোরব্বা বানিয়ে খাওয়া যায়।

ত্বীন ফল খাওয়ার ১৪টি উপকারিতা

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ | ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা

ত্বীন ফলের নির্যাস রক্তের ফ্যাটি এসিড এবং ভিটামিন এর পরিমাণ স্বাভাবিক রেখে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে  | ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা

ত্বীন ফলে রয়েছে পটাশিয়াম যা শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখে নিয়মিত ত্বীন ফল খেলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় | ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা

ত্বীন ফল আমাদের শরীরে ক্যান্সার কোষের বিস্তার প্রতিরোধ করে। শুকনো ডুমুরের প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়,যা মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও ত্বীন ফলের রস খেলে অনিয়মিত মাসিক দূর হয়ে যায়।

হার্ট ভালো রাখতে | ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা

ত্বীন ফল আমাদের শরীরের ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে। ফলে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমতে শুরু করে। ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমে যাওয়ার ফলে আমাদের হার্ট ভালো থাকে তাই হার্ট ভালো রাখতে নিয়মিত এই ফলটি খেতে পারেন। 

রক্তস্বল্পতা দূর করতে | ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা

ত্বীন ফলের মধ্যে রয়েছে আয়রন ও ক্যালসিয়াম। আয়রন দেহের হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। যা শরীরে রক্তের পরিমাণ কমেছে তারা এই ফলটি খেতে পারেন। কারণ ত্বীন ফলে থাকা আয়রন এবং ক্যালসিয়াম রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।

বার্ধক্য দূর করতে | ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা

মানুষের ব্রেইন থেকে মেটালিনিটস হরমোন নিঃসরণ হয়। যা মানুষের বার্ধক্য রোধ করতে ও তারুণ্য ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 30 থেকে 35 বছর পার হলে এই মেটালিনিটস নিঃসরণ কমে যায়। ফলে মানুষ বৃদ্ধ হয়ে যায়। নিয়মিত একটি তিন ফল এবং সাতটি জাইতুন একসাথে নিয়ে প্রতিদিন সেবন করলে বার্ধক্য দূর হয়ে যায় এবং তারুণ্য ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে | ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা

আমরা প্রতিদিন যে খাবার খায় তা হজম হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।ত্বীন ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার। যা খাবার হজমে অনেক সহজ করে। এটি ইরিটেবল বোয়েল সিনড্রোম (IBS) এর মত হজমের সমস্যা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে | ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা

ত্বীন ফল উচ্চ আঁশযুক্ত উপাদানগুলি একটি স্বাস্থ্যকর পরিপাকতন্ত্র বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ত্বীন ফল।

ত্বকের যত্নে | ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা

ত্বীন ফলে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন রয়েছে। চুল পড়া রোধ করতে ও অল্প বয়সে চুল পাকা ভাব দুর করতে ভিটামিন-সি খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে ভিটামিন ই'। ফলে ত্বকের রুক্ষ ভাব দূর হয়ে যায়। ত্বক ফেটে যাওয়া দূর হয়। এছাড়া স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়। তাই ত্বকের যত্নে ত্বীন ফল খাওয়া খুবই উপকারী।

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে | ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা

দৃষ্টিশক্তি ক্ষীন হয়ে গেলে বা চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে গেলে ত্বীন ফল খেতে পারেন। আপনার ক্ষীন দৃষ্টিশক্তি বা হারানো দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত ত্বীন ফল খেলে আপনাদের শক্তি ভালো থাকবে।

বাড়ন্ত শিশুর জন্য | ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা

ত্বীন ফলের মধ্যে ম্যাঙ্গানিজ,জিংক,ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকার ফলে একটি বাড়ন্ত শিশুর জন্য এটি একটি আদর্শ খাবার হতে পারে।

হাড় মজবুত করতে | ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা

ত্বীন ফলের মধ্যে রয়েছে ফসফরাস যা আমাদের হাড়ের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। হাড় মজবুত করতে এবং হাড় গঠনে ডুমুর অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। এছাড়া একটি শুকনো ত্বীন ফলে দিনের চাহিদার প্রায় 3 % ক্যালসিয়াম থাকে। যা হাড়ের ঘনত্ব এবং শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে | ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা

শুকনো ত্বীন ফলের এক টুকরা আপনাকে মাত্র 47 ক্যালরি দেয় এবং মাত্র 0.2 গ্রাম ফ্যাট দেয়। তাই যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য শুকনো ত্বীন আদর্শ ফল।

প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে | ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা

ত্বীন ফল একটি পবিত্র ফল। এটি ভালোবাসা বৃদ্ধি করতে ভূমিকা রাখে এবং লিবিডো উন্নতি করে। কারণ ত্বীন ফলে রয়েছে জিংক, ম্যাঙ্গানিজ,ম্যাগনেসিয়াম এর মতো খনিজ গুলি যা প্রজনন স্বাস্থ্য বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

100 গ্রাম ত্বীন ফলে উপাদান রয়েছে

ক্যালসিয়াম 35 মিলিগ্রাম

কপার 0.70 মিলিগ্রাম 

আয়রন 0.37 মিলিগ্রাম

ম্যাগনেসিয়াম 17 মিলিগ্রাম

ম্যাঙ্গানিজ 0.128 মিলিগ্রাম

জিংক 0.15 মিলিগ্রাম 

সোডিয়াম 1 মিলিগ্রাম

পটাসিয়াম 232 মিলিগ্রাম

ত্বীন ফলের দাম

বন্ধুরা, আপনারা যারা ত্বীন ফলের দাম ২০২৩ সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। তাদের জন্য আমাদের আজকের আর্টিকেলে এই পর্বে ত্বীন ফলের দাম ২০২৩ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

দেশের অভ্যন্তরে ত্বীন ফলের দাম বৃদ্ধির কারণে কিউই ফলের বিদেশী বাজারে আরও দামী বলে মনে হতে পারে। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সমীক্ষা অনুযায়ী, ত্বীন ফলের দাম 2022 সালের ডিসেম্বরে বিশ্ব বাজারে ত্বীন ফলের দাম প্রতি কেজি বাংলাদেশি টাকায় ১৫০০ টাকা আকার অনুযায়ী ত্বীন ফলের দাম কম বেশি আছে।

বাংলাদেশের অনেকে আছেন যারা ত্বীন ফলের কেজি কত তা সম্পর্কে গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাদের সুবিধার্থে ত্বীন ফলের কেজি কত টাকা তা জানানো হলো।

ত্বীন ফল খাওয়ার নিয়ম

ত্বীন ফলের বিশেষ উপকার পেতে কিছু নিয়ম অবলম্বণ করে খাওয়া যায়। যেমন- যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য দুধে ভিজে রেখে দুধসহ ফলটি খাওয়া। এছাড়াও সালদ তৈরি করে খেতে পারেন। ভাতের সাথে সলাদ খাওয়ার পাশাপাশি জুস তৈরি করেও খাওয়া যেতে পারে এই ফলটি।

ত্বীন ফলের ফাইবার শরীরে দ্রুত শোষিত হয়। এর ফাইবার দ্রুত দ্রবীভূত হয়ে করতে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এছাড়াও ত্বীন ফলে বিদ্যমান পেকটিন কোলেস্টেরল কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। ক্যালসিয়াম,পটাসিয়াম,আয়রন ও জিংক সমৃদ্ধ ত্বীন-কে যৌন পরিপূরক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

  • কাঁচা অবস্থায় রান্না করে খেতে পারে।
  • ভাল মতো শুকিয়ে নিয়ে সংরক্ষন করে শুকনো ত্বীন ফল খেতে পারেন।
  • ত্বীন ফলের চামড়া এবং বিচি সহ খাওয়ার উপযোগী।

ত্বীন ফল খাওয়ার অপকারিতা

ত্বীন ফল অনেক সুবিধা দেয় তা সত্ত্বেও, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাওয়া ক্ষতিকারক হতে পারে।
  • ত্বীন ফল ত্বককে সাহায্য করে এবং অ্যালার্জি এড়ায়, তবে অ্যালার্জিযুক্ত লোকদের জন্য এটি উপকারের চেয়ে বেশি ক্ষতি করে। ত্বীন ফল খাওয়ার পরে তাদের ত্বক লাল এবং খিটখিটে হয়ে যায়।
  • যদি তারা অতিরিক্ত ত্বীন ফল খাওয়ার পরে, তবে যারা অ্যাসিডিটি এবং পেটের সমস্যায় ভুগছেন তাদের পেট ফুলে যাওয়া এবং গ্যাস হতে পারে।
  • যেহেতু ত্বীন ফলে পটাসিয়াম থাকে, যা ভাল কিডনির কার্যকারিতা সমর্থন করে, তাই উচ্চ পটাসিয়ামযুক্ত খাবার কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ সুবিধাজনক নয়।

ত্বীন ফলের ছবি

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা যারা ত্বীন ফলের ছবি দেখতে এতক্ষণ ধরে অধীর আগ্রহে আমাদের আজকের পোস্টটি পড়ছিলেন। তাদের জন্য নিচে ত্বীন ফলের ছবি দেওয়া হল।
ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

সর্বশেষ কথা - ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা 

প্রিয় পাঠক, আপনাদের নিশ্চয়ই বোঝাতে পেরেছি ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।ত্বীন ফল খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তাই ত্বীন ফল খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থেকে পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url