OrdinaryITPostAd

বাচ্চাদের ঘামাচি হলে করণীয়

পিয়া পাঠক, আপনারা হয়তো বাচ্চাদের ঘামাচি হলে করণীয় গুগলে সার্চ করে আমাদের ওয়েবসাইটে এসেছেন। আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকের পোস্টে বাচ্চাদের ঘামাচি হলে করণীয় এ বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। বাচ্চাদের ঘামাচি হলে করণীয় সম্পর্কে জানতে শেষ পর্যন্ত আমাদের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

বাচ্চাদের ঘামাচি হলে করণীয়

তাহলে বন্ধুরা দেরি না করে জেনে নেয়া যাক, বাচ্চাদের ঘামাচি হলে করণীয়। এছাড়াও আজকের পোস্টে আরও জানতে পারবেন, ঘামাচি কি, ঘামাচি কেন হয়, ঘামাচি হওয়ার কারণ, ঘামাচি কমানোর ঘরোয়া উপায়, বাচ্চাদের ঘামাচির জন্য কোন পাউডার ভালো, বাচ্চাদের ঘামাচি হলে করণীয়, গরমে ঘামাচি হলে যে কাজ করা গুলো থেকে বিরত থাকবেন। এই সকল তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে নিচে আলোচনা করা হয়েছে।

ঘামচি কি

বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ। শীতের শেষ গ্রীষ্মের শুরু আসে গরমকাল গ্রীষ্মকাল আসলে শুরু হয়ে যায় অফুরন্ত গরমের সময়। এই গরমের কারণে আমাদের বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ হয়ে থাকে। ঘামাচি এক ধরনের চর্মরোগ। আমাদের যখন শরীর গরমে ঘেমে ভিজে যায়। সেই ভিজে থাকা স্থানে পরবর্তীতে ময়লা ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে ঘামাচি তৈরি হয়। এই ঘামাচির কারণে আমাদের চুলকানি জ্বালা পোহাতে হয়।

ঘামাচি কেন হয়

গরমকালে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে ঠান্ডা করার জন্য ত্বকে থাকা ঘামগ্রন্থির বন্ধ হওয়ার কারণে ঠিকমতো ঘামের উপাদান গুলো শরীর বের হতে পারে না। ত্বকের ভিতরে জমে থাকা ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া থেকে ঘামাচি হয়। অনেক সময় অপরিষ্কার নোংরা জাতীয় কাপড় পরলে শরীরে ঘামাচি সৃষ্টি হয়। তাই ঘামাচি থেকে রক্ষা পেতে আমাদের কাপড় চোপড় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা উচিত এবং পরিষ্কার কাপড়-চোপড় পরিধান করা উচিত।

ঘামাচি হওয়ার কারণ

ঘামাচি এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। জিনগত সমস্যার কারণে ঘামাচি হতে পারে।

আবার গরমকালে গরম থেকে ঘামাচি হয়ে থাকে। 

এছাড়া মোটা টাইট কাপড় ব্যবহার করলে ঘামাচি হতে পারে।

কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিকার কারণে ঘামাচি হতে পারে। 

গরমকালে বাহিরে কাজ করে এসে গোসল না করার কারণে ঘামাচি হয়ে থাকে।

শরীরে ভিটামিনের চাহিদা কম হলেও ঘামাচি হতে পারে।

দীর্ঘদিন ধরে একই কাপড় ব্যবহার করলে ঘামাচি হতে পারে।

গরমের দিনে অতিরিক্ত পানি পান করলে সেই পানি শরীর থেকে বের হয়ে গিয়ে। ত্বকের জমে থেকে ব্যাকটেরিয়ার কারণে ঘামাচি হয়ে থাকে।

ঘামাচি কমানোর ঘরোয়া উপায়

তাই বোঝা যাচ্ছে ঘামের পরিমাণ কমাতে পারলে ঘামসির পরিমাণ কমানো সম্ভব। শীতকালে আমাদের শরীরে তেমন একটা ঘামাচি দেখা যায় না। কারণ শীতকালে শরীর ঠান্ডা থাকে। তাই তাদের ঘাম বেশি হয় ও ঘামাচি হওয়ার সম্ভাবনা আছে তারা অবশ্যই হালকা সাদা রংয়ের পাতলা কাপড় পরিধান করে বেড়াতে হবে। এতে করে ঘামাচি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এছাড়াও তাদের অতিরিক্ত ঘামাচি হয় তারা সেক্ষেত্রে আইসব্যাগ বা ঠান্ডা পানি বা বরফ নিয়ে ঘামাচি সংক্রান্ত স্থানে ঠান্ডা পানির দিয়ে মুছে দিতে হবে। অন্তত পাশ থেকে দশ মিনিট ধরে মুছে দিন। নিচে প্রাকৃতিক উপায়ে ঘামাচি কমানোর উপায় দেওয়া হলো।

অ্যালোভেরা জেলঃ অ্যালোভেরা জেল আমাদের ত্বকের যত্নে বেশ কার্যকরী। যারা ঘামাচি নিয়ে চিন্তায় আছেন তারা এই প্রাকৃতিক উপায়ে ঘামাচি দূর করতে পারবেন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন এলোভেরা জেল পেস্ট করে হাতে করে খামাচিযুক্ত স্থানে পাতলা প্রলেপ দিন। এরপর হালকা কুসুম পানি অথবা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করুন। তাহলে আপনি অ্যালোভেরা জেল এর ম্যাজিক দেখতে পাবেন। আশা করছি অনেক ভালো উপকার পাবেন।

লেবুর রসঃ লেবু অনেক প্রাকৃতিক গুণসম্পন্ন একটি মহাঔষধ। লেবু প্রাচীনকাল থেকে আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যার কারণে ব্যবহার করা হচ্ছে। লেবুর রসে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা ঘামাচি দূর করতে সাহায্য করবে। এক গ্লাস পানির সাথে এক স্লাইস লেবু মিশিয়ে খেতে হবে। আপনি প্রতিদিন দু থেকে তিন গ্লাস পানি সেবন করবেন। এভাবে দুই সপ্তাহ ব্যবহার করবেন। তাহলে নিশ্চয়ই আপনি এর উপকারিতা বুঝতে পারবেন এবং ঘামাচি থেকে মুক্তি পাবেন।

আলুঃ আলু আমরা নিত্যদিন খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করি। আলু সাধারণত আমরা রান্না করে খাই। আলু রান্না করে খাওয়া ছাড়াও আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। আপনি কি খামাচি নিয়ে ভাবছেন। ঘামাচি ভালো করতে আপনি কাঁচা আলু যদি পেস্ট করে ঘামাচি উপরে প্রলেপ দিয়ে পাঁচ থেকে দশ মিনিট রেখে পরবর্তীতে হালকা কুসুম পানি অথবা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। তাহলে এর উপকার বুঝতে পারবেন।

নিম পাতার রসঃ নিম পাতা বিভিন্ন গবেষকদের মতে মহা ওষুধ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। আপনি যদি ঘামাচি নিয়ে চিন্তায় থেকে থাকেন তাহলে আপনার জন্য সবচাইতে ভালো একটি উপায় হল নিম পাতার রস। এই নিম পাতাতে আছে আন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ঘামাচি নিরাময় বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। নিরাময়ের প্রতিদিন নিম পাতার পেস্ট করে সম্পন্ন শরীরে প্রতিদিন নিয়ম করে দুই সপ্তাহ থেকে ব্যবহার করবেন এতে করে আপনি ঘামাচি থেকে মুক্তি পাবেন।

বরই পাতাঃ বড়ই পাতাকে পুষ্টিগুণ ও মহাওষুধ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। ত্বকের যত্ন বড়ই পাতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ঘামাচি ভালো করতে আপনি প্রতিদিন গোসল করার পূর্বে গরম পানিতে বড়ই পাতা দিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন এরপর পানি হালকা ঠান্ডা হলে সেই পানি দিয়ে গোসল করুন এতে করে আপনার ঘামাচি দূর হয়ে যাবে।

কমলার খোসাঃ আপনি ঘামাচি ভালো করার জন্য কমলার খোসার পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন। কমলার খোসাতে রয়েছে ভিটামিন সি ও এন্টি অক্সিডেন্ট যা আপনার ঘামাচিদের দূর করতে সাহায্য করবে।

পেয়ারার পাতাঃ পেয়ারা গাছের কচি কুষি কচি পাতা পেস্ট করে খাবেন তাহলে ঘামাচি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। পেয়ারার কচিপাতা প্রতিদিন নিয়ম করে একমাস খেতে হবে তাহলে ঘামাচি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

মুলতানি মাটি ঃ আপনি যদি একজন গ্রামে বসবাস করেন। তাহলে অবশ্যই আপনি মুলতানি মাটির কথা শুনে থাকবেন। মুলতানি মাটি ত্বকে যে কোন সমস্যা দূর করতে কাজ করে থাকে। আপনি ঘামাচি ভালো করতে চার থেকে পাঁচ টেবিল চামচ সুলতানি মাটি, গোলাপ জল দুই থেকে তিন টেবিল চামচ পরিমাণ পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এবার আপনার ঘামাচি যুক্ত জায়গায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট মেখে রোদে থাকতে হবে। এরপর মাঠি শুকিয়ে গেলে আপনি ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করে মুলতানি মাটি আপনার ত্বক থেকে পরিষ্কার করে ফেলবেন। এভাবে আপনি এক সপ্তাহ ব্যাবহার করলে আপনার খামাচি থেকে মুক্তি পাবেন।

বাচ্চার ঘামাচির জন্য কোন পাউডার ভালো

গরমকালের অতি পরিচিত একটি সমস্যার নাম হল ঘামাচি। ঘামাতে হয় না এরকম মানুষ অনেক কমই পাওয়া যাবে। আজকের পোস্টে বাচ্চাদের ঘামাচির জন্য কোন পাউডার ভালো বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছি।

আমরা বাচ্চাদের গরমে ঘামাছির জন্য পাউডার ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু কোন পাউডার ঘামাচির ক্ষেত্রে কার্যকরী এটা অনেকেরই জানা নেই। আপনাদের জানার সুবিধার্থে আজকের পোস্টে আপনাদের জন্য বাচ্চাদের ঘামাচির দূর করতে কোন পাউডার ভালো তার নাম দেওয়া হল।

  • তিব্বত পাউডার (Tibbet  Prickly Heat Powder)
  • বুরো প্লাস (Boro Plus Ice Cool)
  • রিভাইভ তেলকম পাউডার (Revive Telcom Powder)
  • ওয়াইল্ড স্টোন কুল টলক (Wild Stone Cool Powder)
  • ডুড বডি পাওডার (Dude Body Powder)

বাচ্চাদের ঘামাচি হলে করণীয়

বাচ্চাদের সময় মতো গোসল করাঃ গরমকাল তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে। ছোটকালে বাচ্চারা অনেক দুষ্টু হয় সহজে গোসল করতে চায় না গোসল করতে ভয় পায়। তাই আমাদের বাবা-মা হিসেবে কর্তব্য বাচ্চাদের ঠিক সময়ে গোসল করানো। কারণ সময় মত গোসল না শরীরে থাকা জমে জীবাণু বাচ্চার ত্বকে ঘামাচি তৈরি করতে পারে। ঘামাচি থেকে বাচ্চাদের রক্ষা করতে আমাদের সময় মতো বাচ্চাদের গোসল করানো কর্তব্য।

বাচ্চাদের ঘামাচি হলে করণীয়

বাচ্চাদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোশাক ব্যবহার করাঃ বাচ্চারা কাপড় ব্যবহার করার সময় যদি কোন কাপড় নোংরা হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে সেটির খুব দ্রুত যেন পরিষ্কার করে নতুন কাপড় ব্যবহার করা হয়। কারণ নোংরা কাপড় পড়ে থাকলে জীবাণুর কারণে সেই স্থানে চুলকানির মাধ্যমে ঘামাচি তৈরি হতে পারে। তাই বাচ্চার ত্বকের ঘামাচির কথা চিন্তা করে সঠিক সময় সঠিক যত্ন নেয়া উচিত।

গরম কালে বাচ্চাদের নিয়মিত পাউডার ব্যবহার করাঃ বাচ্চাদের শরীর অনেক শুষ্ক হয় । শুষ্ক ত্বক থাকার কারণে খুব সহজেই বাচ্চাদের ঘামাচি হতে পারে। শুষ্ক ত্বক থেকে কোন কারণে ঘামাচি তৈরি হতে না পারে। তাই বাচ্চাদের শুষ্ক ত্বক দূর করতে এবং মসৃণ তর্কের ও ঘামাচি দূর করার জন্য বাচ্চাদের গরমকালে নিয়মিত গোসলের পরে ঘামাচি নাশক পাউডার ব্যবহার করতে হবে।

শিশুর শরীর ঘামলে ঘাম মুছে দিতে হবেঃ গরমে অনেক সময় দেখা যায় বাচ্চারা ঘুমালে তাদের শরীর গরমে থেমে যায়। এই ঘেমে যাওয়া থেকে বাচ্চাদের শরীরে জ্বর ও ঘামাচির মত জীবাণু আক্রমণ করতে পারে। তাই আমাদের উচিত বাচ্চারা যখন ঘুমন্ত অবস্থায় ঘেমে যায় তখন তাদের ঘামগুলো মুছে দেওয়া। এতে করে জীবাণু মুক্ত হবে এবং ঘামাচি  আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

গরমে ঘামাচি হলে যে কাজগুলো করা থেকে বিরত থাকবেন

  • গরমকালে ঘামাচি হলে শরীরে ঘাম জমে থাকলে চুলকানি হয় ঘামাচির স্থানে চুলকালে স্থানে নখ দিয়ে আঘাত না করা।
  • অতিরিক্ত ঘামাচি হলে কোন ক্রিম ব্যবহার করা যাবে না।
  • আমাদের শরীরের অধিক তাপমাত্রা যুক্ত স্থান থেকে দূরে থাকা।
  • ঘামাচি হলে মোটা কাপড় পড়া থেকে বিরত থাকা।
  • ঘামাচি হলে কালো রংয়ের কাপড় পরা থেকে বিরত থাকা।
  • ঘামাচি হলে চা কিংবা গরম পানি না খাওয়া।
  • অতিরিক্ত ঘামাচি হলে দৌড়াতে হয় এমন খেলাধুলা থেকে বিরত থাকা।
  • এলার্জি যুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

সর্বশেষ কথা

প্রিয় পাঠক আজকের পোস্টে ঘামাচি কি, ঘামাচি কেন হয়, ঘামাচি হওয়ার কারণ, ঘামাচি কমানোর ঘরোয়া উপায়, বাচ্চাদের ঘামাচির জন্য কোন পাউডার ভালো, বাচ্চাদের ঘামাচি হলে করণীয়, গরমে ঘামাচি হলে যে কাজ করা গুলো থেকে বিরত থাকবেন এই সকল প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে উপরে তুলে ধরেছি। আশা করি আজকের পোস্টে পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হয়েছে। যদি আমাদের এই পোস্টটি আপনাদের পছন্দ হয়ে থাকে তাহলে আমরা খুবই আনন্দিত।

যদি আপনাদের বাচ্চাদের ঘামাচি বিষয়ে কোন প্রশ্ন থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করি পরবর্তী পোস্টে আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য চেষ্টা করব।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থেকে শেষ পর্যন্ত পোস্টটি করার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করে ভোরের আলো আইটির পাশে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url