রোজা কাকে বলে - ২০২৪ সালে প্রথম রোজা কত তারিখে - রমজানে রোজার ফজিলত
আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় আর্টিকেল পাঠক, আজকে আপনাদের জন্য রমজানে রোজার ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি। সামনে রমজান মাস আসতে চলেছে তাই অনেকেরই রোজা সম্পর্কে মনে অনেক প্রশ্ন থেকে থাকে। আজকের পোস্টে আপনাদের জন্য আমরা রোজা শব্দের অর্থ, রোজা কাকে বলে, রোজা কত প্রকার ও কি কি, ২০২৪ সালে প্রথম রোজা কত তারিখে, রোজা সম্পর্কে হাদিস, রমজানে রোজার ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
তাহলে দেরি না করে রোজা কাকে বলে-রোজা সম্পর্কে হাদিস-রমজানের রোজার ফজিলত সম্পর্কে জেনে নিন। রোজা সম্পর্কে জানতে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পেজে সূচিপত্রঃ রোজা কাকে বলে - ২০২৪ সালে প্রথম রোজা কত তারিখে - রমজানে রোজার ফজিলত
রোজা শব্দের অর্থ
রোজা শব্দের অর্থ সিয়াম। ইসলামের মূল ভিত্তি হলো পাঁচটি তা হল কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ্ব ,যাকাত। ইসলামের মূল ভিত্তির মধ্যে একটি হলো রোজা। সারা বিশ্বে রমজান মাসে রোজা পালন করা মুসলিম ধর্মের মুমিন বান্দাদের জন্য ফরজ।
রোজা কাকে বলে
রোজা বলতে, দিবাগত রাতে সেহেরী খেয়ে রোজার দোয়া পড়ে রোজার নিয়াত করে। পরের দিন ভোরের সূক্ষ্ম আলো থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থেকে, পাপাচার, খারাপ কর্ম থেকে বিরত থেকে, সেই সাথে যাবতীয় ভোগ বিলাস থেকে বিরত থাকার নাম হল রোজা। ইসলামের সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যেকটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানদের রমজান মাসের প্রতি দিন রোজা রাখা ফরজ।
রোজা কত প্রকার ও কি কি?
রোজা সাধারণত চার প্রকার। যথাঃ ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাহ, নফল। এছাড়া যে সকল রোজা আমাদের করা ফরজ বা কোন কারনে ভেঙে ফেললে তার করণীয় হলঃ রমজান মাসের রোজা। কোন কারণবশত রমজানের রোজা ভঙ্গ হয়ে গেলে তার কাজা আদায় রোজা। শরীয়তে স্বীকৃত কারণ ব্যতীত রমজানের রোজা ছেড়ে দিলে তা কাফফারা হিসেবে ৬০টি রোজা।
২০২৪ সালে প্রথম রোজা কত তারিখে শুরু হবে
প্রতিবছরের মত আরবি মাসগুলো যেহেতু চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। এ বছরেও ২০২৪ সালের ১১ মার্চ সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা গেলে ১২ শে মার্চ প্রথম রোজা শুরু হবে। এছাড়াও ইব্রাহিম আল জারোয়ান বলেন, ২০২৪ সালে রমজানের নতুন চাঁদ দেখা যাবে ১১ শে মার্চ স্থানীয় সময় রাত ৯ঃ২৩ মিনিটে। একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর হাদিস অনুযায়ী চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করতে হবে রোজা কবে থেকে শুরু হবে।
রোজা সম্পর্কে হাদিস
আরবি মাস কখনো ২৯ দিনে কখনো ৩০ দিনে হয়ঃ হযরত মুহাম্মদ সাঃ রমজান
সম্পর্কে আলোচনা করে বললেন, তোমরা চাঁদ না দেখে রোজা রেখোনা। আবার চাঁদ
না দেখা পর্যন্ত ইফতার করো না। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার কারণে স্বাদ দেখা না গেলে
মাসে ৩০ দিন পূর্ণ করবে।
রাতের বেলা স্ত্রী সহবাস হালালঃ হযরত বারা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর সাহাবীদের কেউ রোজা রেখে ইফতারের সময় কিছু না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে তিনি আর কিছুই খেতেন না। পরবর্তী দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত এভাবে রোজা রাখতেন। একদিনের ঘটনা, কায়েস ইবনে সিরমা আনছারী রাঃ রোজা রেখেছিলেন। ইফতারের সময় হলে তিনি স্ত্রীর কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে খাবার মত কিছু আছে কি? স্ত্রী বললেন না, তবে আমি শ করে দেখে আসি তোমার জন্য কিছু জোগাড় করা যায় কিনা।
কায়েস ইবনে সিরমা আনছারী রাঃ দিনের বেলায় ক্ষেত খামারে কর্মব্যস্ত থাকতেন। স্ত্রী খাবার তালাশ যাওয়ার পরে ঘুমে তার চক্ষু মুজে আসলো। তার স্ত্রী ফিরে আসে এই অবস্থা দেখে বলে উঠলেন তোমার জন্য আফসোস। পরদিন দ্বিপ্রহরের তিনি সজ্ঞা হারিয়ে ফেললেন। ঘটনাটি হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর নিকট গেলে কুরআনে পাকের এ আয়াত নাযিল হলো। রমজানের রাতের বেলা তোমাদের স্ত্রীর সাথে মেলামেশা ও সহবাস হালাল করা হয়েছে। এই হুকুম অব্যাহত হয়ে সকলেই অত্যন্ত আনন্দিত হলেন। এরপর নাজিল হলো তোমরা খাও ও পান কর যখন পর্যন্ত না ফজরের কালো রেখা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আর রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ কর।
সেহেরী ও ফজরের নামাজের মাঝে সময়ের ব্যবধানঃ হযরত সহল ইবনে সাদ রাঃ
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বাড়িতে পরিবার পরিজনদের সাথে সেহরি খেতাম।
তারপর হযরত মুহাম্মাদ সাঃ এর সাথে সেহেরী খাওয়ার জন্য ফজরের নামাজ পড়ার জন্য
ব্যস্ত হয়ে পড়তাম।
সেহরি খাওয়ার কল্যাণ ও বরকত লাভ হয়ঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর
রাঃ থেকে বর্ণিত। কোন এক সময় হযরত মোহাম্মদ সাঃ একাধারে রোজা রাখতে থাকলে
লোকেরা একাধারে রোজা রাখতে শুরু করলেন কিন্তু তা তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়লে
হযরত সালাম তাদেরকে নিষেধ করলেন। সকালে বললেন, আপনি যে একাধারে রোজা
রেখেছেন? তিনি বললেন আমার অবস্থা তোমাদের মত নয় আমাকে আল্লাহর পক্ষ হতে
পানাহার করানো হয়।
দিনে রোজার নিয়ত করাঃ হযরত সালমাহ ইবনে আকওয়া রাঃ থেকে বর্ণিত
আশুরার দিন হযরত মুহাম্মদ সাঃ লোকদের মধ্যে এ কথা প্রচার করার জন্য একজন ঘোষক
প্রেরণ করলেন, যে ব্যক্তি আজ খানা খেয়েছ সে যেন সন্ধ্যা পর্যন্ত আর না খায় অথবা
রোজা রাখে। আর যে এখনো খানা খায়নি সে যেন আর না খায় এবং রোজা রাখে।
রোজাদার অপবিত্র অবস্থায় ভোরে উপস্থিত হলেঃ হযরত আব্দুর রহমান থেকে বর্ণিত। তিনি মারওয়ান কে জানালেন যে, আইসা ও উম্মে সালমাহা রাঃ তাকে বলেছেন যে, হযরত মুহাম্মদ সাঃ তার স্ত্রীর সাথে সহবাস জনিত নাপাকি নিয়ে রাতে নিদ্রায় যেতেন এবং সে অবস্থায় ফজরের ওয়াক্ত হয়ে যেত। তিনি গোসল করে রোজার নিয়ত করে রোজা রাখতেন।
এ হাদিসের প্রেক্ষিতে মারওয়ান আব্দুর রহমান ইবনে হারেছকে বললেন, আমি আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, এই হাদিস শুনিয়ে আমি আবু হুরাইকে অবাক করে দাও। রোজাদারের রোজা হয় না বলে তিনি ফতোয়া দিয়ে থাকেন। ওই সময় মারওয়ান মদিনার শাসনকর্তা ছিলেন।
হাদিসের রাবি আবু বক্কর বলেন, আব্দুর রহমানের নিকট এ কথা জানা ছিল না। এরপর আমরা ঘটনা ক্রমে জুলহোলইফাই একত্র হলাম। সেখানে আবু হুরাইয়া রাদিয়াল্লাহু এর এক খন্ড জমে ছিল। আব্দুর রহমান আবু হুরাইকে বললেন, আমি আপনাকে একটি কথা বলতে চাই।
মারওয়ান সে ব্যাপারে আমাকে আল্লাহর কসম দিয়ে না বললে আমি আপনাকে তা বলতাম না। অতঃপর তিনি আয়েশা ও উম্মে সালমা রাঃ বর্ণিত হাদিসে বললেন এবং এও বলেন যে ফজল ইবনে আব্বাস রাদিয়ালাহু ও আমাকে এরূপ হাদিস বর্ণনা করে শুনিয়েছেন।
আর তিনি
সর্বাধিক অবহিত। হাম্মাম ও ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু
হতে বর্ণনা করা হয়েছে ।এরূপ ক্ষেত্রে রাসূল হযরত মোহাম্মদ সাঃ রোজা ভেঙ্গে ফেলার
আদেশ দিতেন। তবে প্রথমত তো রেওয়াতেরতীর সন্দেহ সুদৃঢ়।
রোজা অবস্থায় স্ত্রী সহবাস কারীর কাফফারাঃ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তির হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর নিকট এসে বলল এ হতভাগা রমজানে রোজাদার অবস্থায় সহবাস করেছে। হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেন, একটি ক্রীতদাস আজাদ করার সামর্থ্য তোমার আছে কি? সে বলল না। হযরত মুহাম্মদ সাঃ বললেন, তুমি একাধারে দুমাস রোজা রাখতে পারবে কি? সে বলল না। হযরত আবার বললেন, তবে তোমার ৬০ জন মিসকিনকে খাওয়ানোর মতো সামর্থ্য আছে কিনা।
লোকটি আবারও বলল না। এমন সময় হযরত মোহাম্মদ সাঃ এর নিকট এক আর এক অর্থাৎ ঝুড়ি
ভর্তি খেজুর আনা হলো। "আরাক বলা হয় খেজুরের বাকলের থলেকে" হযরত মুহাম্মদ
সাঃ লোকটিকে বললেন, এগুলো তোমার তোমার পক্ষ হতে অভাবী লোকদের খেতে দাও। সে
বলল আমা হতে অধিক অভাবে লোকদের খাওয়াবো। কসকরময় সমভূমির মধ্যহিত স্থানে কোন
পরিবারে আমার পরিবার অপেক্ষা অভাবি নয় তখন নবী করিম সাঃ বলেন তোমরা তবে তোমার
পরিবারকে খেতে দাও।
এহরাম অবস্থায় শিংগা লাগানোঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস
রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত। হযরত মুহাম্মদ সাঃ শিংগা লাগিয়েছেন এবং রোজা
অবস্থায় শিংগা লাগিয়েছেন।
সফর অবস্থায় রোজা রাখাঃ হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু থেকে
বর্ণিত। হামজা ইবনে আমর আসলামী এর রোজা রাখতে অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি নবী হযরত
মুহাম্মদ সাঃ কে বলেলন, আমি সফরে রোজা রেখে থাকি। তখন হযরত মোহাম্মদ
সাঃ বললেন, সফর অবস্থাই তুমি ইচ্ছা করলে রোজা রাখতে পারো আবার ইচ্ছে করলে
নাও রাখতে পারো।
প্রচন্ড গরমে রোজা রাখা পূর্ণের কাজ নয়ঃ হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ
রাদিআল্লাহু থেকে তিনি বলেছেন, হযরত মুহাম্মদ সাঃ কোন এক সফরে থাকাকালীন এক
স্থানে একটি জটলা দেখতে পেলেন। তার মধ্যে একজন লোককে দেখলেন যাকে ছায়া করে দেয়া
হয়েছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন কি হয়েছে? লোকেরা বলল লোকটি রোজা রেখেছে শুনে
তিনি বললেন সফরে রোজা রাখা পণ্যের কাজ নয়।
ফিদিয়া হিসেবে মিসকিনকে খাদ্য দান করবেঃ হযরত নাফে রাঃ হজরত
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণনা করেছেন, যে তিনি কোরআন মাজীদে
ফিদিয়া হিসেবে মিসকিনকে খাদ্য দান করবে আয়াত পড়ে বললেন এর হুকুম রহিত হয়ে
গেছে।
দ্বীনের ক্ষেত্রে নারীদের ঘাটতিঃ হযরত আবু সাঈদ রাঃ
বর্ণিত। হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেন, এটি কি ঠিক নয় যে হায়েজ শুরু হলে নারীরা
নামাজ পড়তে বা রোজা রাখতে পারবেনা। আর দিনের ক্ষেত্রে এটি তাদের ঘাটতি।
কোন মৃত ব্যক্তির ফরজ রোজা কাজা থাকলে সে সম্পর্কে হাদিসঃ হযরত
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাম বলেছেন, কোন মৃত
ব্যক্তির উপর কাজা রোজা থাকলে ওই ব্যক্তি অভিভাবক তার পক্ষ হতে তা আদায় করবে।
ইফতারের সময়ঃ হযরত আছেম ইবনে আব্দুল্লাহ রাদি আল্লাহু তার পিতা
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু হতে বর্ণনা করেছেন। হযরত
মোহাম্মদ সাঃ বলেছেন যে সময় এদিক পূর্ব দিক হতে আধার হয়ে আসে আর দিনে পশ্চিম
দিক দিয়ে চলে যায় এবং সূর্য অস্ত যায় তখন রোজাদারদের ইফতারের সময় হয়ে
যায়।
বছরে কোন দিন রোজা রাখা উচিত আর কোন দিন রোজা রাখা উচিত নয়
শুধু জুমার দিনে রোজা রাখাঃ আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন
আমি হযরত মুহাম্মদ সাঃ কে বলতে শুনেছি তোমাদের কেউ যেন কখনো শুধুমাত্র জুম্মার
দিন রোজা না রাখে। যদিও রাখতে চাই তবে জুম্মার আগের দিন কিংবা পরের দিন যেন একটি
রোজা রেখে নেয়।
কোরবানি দিন রোজা রাখাঃ হযরত মায়মুনা রাদিয়াল্লাহু থেকে
বর্ণিত। লোকজন আরাফাতের দিন নবী করীম হযরত মোহাম্মদ সাঃ এর রোজা রাখার
ব্যাপারে সন্দেহ করেছিলেন। তখন আমি তার খেদমতে কিছু দুধ পাঠালাম এ সময় তিনি
আরাফাতের অবস্থানে করেছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ তিনি পান করে ফেললেন।
ঈদুল ফিতর ঈদুল আযহার দিন রোজা রাখাঃ আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত মুহাম্মদ সাঃ ঈদুল ফিতর ও কুরবানি ঈদের দিন রোজা
রাখতে নিষেধ করেছেন। তিনি আরো যা নিষেধ করেছেন তা হল চাদর ইত্যাদি এমন ভাবে শরীরে
জড়িয়ে দেওয়া যাতে হাত বের করা কষ্টকর হয় এবং এক কাপড় পরিহিত অবস্থায় হাটু
উদয় হারা করে বসা এতে তলদেশ উন্মুক্ত হয়ে যায়। আবার ফজর ও আসর নামাজ পড়ার পর
অন্য কোন নামাজ পড়া।
আশুরার রোজাঃ হযরত সালেম রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত। তার পিতা
বলেন, হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন, আশুরার দিন কেউ ইচ্ছা করলে রোজা রাখতে
পারে।
শবে কদর রমজানের শেষ সাত দিনেঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর
রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত। হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর কতিপয় সাহাবীকে
স্বপ্নযোগে রমজানের শেষ সাত রাতে শবে কদর দেখানো হয়েছিল। তখন হযরত মুহাম্মদ
সাঃ বললেন, আমি দেখতে পাচ্ছি তোমাদের স্বপ্ন শেষ সাত রাতে সামঞ্জস্যশীল হয়ে
গেছে। তাই যে ব্যক্তি তার খোঁজ করতে চাই সে যেন সে সাত রাতে তা তালাশ করে।
রমজানের শেষ ১০ দিনের আমলঃ হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত। যখন রমজানের শেষ দশ দিন আগমন করত, তখন হযরত মুহাম্মদ সাঃ পরিধানের কাপড় মজবুত করে বাধতেন। রাত জাগতেন এবং পরিবারের লোকজনদেরকে জাগাতেন।
রমজানের রোজার ফজিলত
হযরত তালহা ইবনে ওবায়দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। একদা জনৈক বেদুইন হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর নিকট আসলো। তার মাথার চুল ছিল এলোমেলো বিক্ষিপ্ত। সে বলল হে আল্লাহর রাসূল আমাকে বলুন আল্লাহ আমার উপর কত ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। তিনি বললেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। কিন্তু তুমি যদি নফল নামাজ পড়ো তবে তা স্বতন্ত্র। লোকটি বলল আমাকে বলো না আল্লাহ আমার উপর কতটি রোজা ফরজ করেছেন।
তিনি বলল সমস্ত রমজান মাস রোজা রাখা ফরজ কিন্তু তুমি যদি নফল রোজা রাখ তবে তা
স্বতন্ত্র। লোকটি আবারও বলল আমাকে বলুন আল্লাহ আমার উপর কি পরিমাণ যাকাত ফরজ
করেছেন। তাকে ইসলামের রীতিনীতি বিধি-বিধান জানিয়ে দিলেন সে বলল সে মহান সত্তার
যিনি আমাকে সত্য বিধান দিয়ে সম্মানিত করেছেন। আল্লাহ আমার উপরে যা ফরজ করেছেন
আমি তার অধিক কিছু করবোনা আর কমও কিছু করবোনা। লোকটির উক্তি শুনে নবী করিম হযরত
মোহাম্মদ সাঃ সে সত্য বলে থাকলে সাফল্য অর্জন করলো অথবা বললেন সে সত্য বলে থাকলে
বেহেশত লাভ করল।
রমজান মাস পবিত্র একটি মাস। এই মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে। সারা বিশ্বে এই মাসে
ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে পালন করা হয়ে থাকে। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য
রোজা ফরজ করেছেন। এই মাসেতে বিশেষ কিছু সওয়াব আছে যা আমাদের বিশ্বনবী হযরত
মুহাম্মদ সাঃ আমাদের শিখিয়ে গেছেন। বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
- ফরজ রোজা পালন করা।
- ফরজ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের শরিক আদায় করা।
- বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা।
- দান সদকা করা।
- হজ্ব পালন করা।
- সত্য কথা বলা ও মিথ্যা কথা বলা থেকে বিরত থাকা।
- সৎ কাজ করা।
- সুদ দেওয়া সুদ নেওয়া থেকে বিরত থাকা।
- বেশি বেশি দোয়া করা।
সর্বশেষ কথাঃ রোজা কাকে বলে - ২০২৪ সালে প্রথম রোজা কত তারিখে - রমজানে রোজার ফজিলত
প্রিয় পাঠকগণ, আজকের এই আর্টিকেলটি পরে রোজা শব্দের অর্থ কি, রোজা কাকে বলে,
রোজা কত প্রকার ও কি কি, ২০২৪ সালে প্রথম রোজা কত তারিখে, রোজা সম্পর্কে হাদিস,
রমজান রোজার ফজিলত সকল তথ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর হাদিস
অনুসারে রোজা সম্পর্কে অবশ্যই জ্ঞান অর্জন করেছেন। উপরে সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর
এবং বিষয়গুলি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উপকৃত
হয়েছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থেকে শেষ পর্যন্ত পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url