মানবাধিকার কাকে বলে - মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা - মানবাধিকারের গুরুত্ব
আপনি কি মানবাধিকার কাকে বলে, মানবাধিকার রক্ষার জাতিসংঘের ভূমিকা, মানবাধিকারের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক? তাহলে আজকের পর্বটি আপনার জন্য। কারণ আজকে আমরা আলোকপাত করবো মানবাধিকার কাকে বলে, মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা, মানবাধিকারের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে আজকের পোস্টটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
প্রত্যেকটি দেশের রাষ্ট্রের মানুষের রয়েছে মানবাধিকার। তাহলে বন্ধুরা কথা না বাড়িয়ে মানবাধিকার কাকে বলে - মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা - মানবাধিকারের গুরুত্ব জেনে নিন। এছাড়া আরো জানতে পারবেন মানবাধিকার কি ও কেন, মানবাধিকারের প্রকারভেদ, মানবাধিকার গুলো কি কি, মানবাধিকারের প্রয়োজন কেন, মানবাধিকারের শিক্ষা কি, বিশ্বজনীন মানবাধিকার দিবস সম্পর্কে আরো জানতে শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন।
পেজের সূচিপত্রঃ মানবাধিকার কাকে বলে - মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা - মানবাধিকারের গুরুত্ব
- মানবাধিকার কি ও কেন
- মানবাধিকার কাকে বলে
- মানবাধিকারের প্রকারভেদ
- মানবাধিকার গুলো কি কি
- মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা
- মানবাধিকার প্রয়োজন কেন
- মানবাধিকার শিক্ষা কি
- মানবাধিকারের গুরুত্ব
- বিশ্বজনীন মানবাধিকার দিবস ১৯৪৮
- সর্বশেষ কথাঃ মানবাধিকার কাকে বলে - মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা - মানবাধিকারের গুরুত্ব
মানবাধিকার কি ও কেন
মানবাধিকারের অন্তর্নিহিত বিষয় হচ্ছে মানুষ ও অধিকার। শব্দ দুটি অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যমণ্ডিত। সহজ ভাবে মানবাধিকার বলতে আমরা সেই সব অধিকার কে
বুঝি যা নিয়ে মানুষ জন্মগ্রহণ করে এবং যা তাকে পরিপূর্ণ মানুষের বিকশিত করতে
সাহায্য করে এবং যা হরণ করলে মানুষ আর মানুষ থাকে না। মানুষ হিসাবে জন্মেছে বলেই
এসব অধিকার তার প্রাপ্য হয়েছে। মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। আর মানুষের
শ্রেষ্ঠত্ব শিখরে উঠতে দরকার মানবাধিকার। মানবাধিকার ছাড়া মানুষের উন্নতি ,
মানুষ পরিপূর্ণরূপে মানুষ হয়ে উঠতে পারেনা।
বিশেষ মর্যাদার কারণে মানবাধিকারের ঘোষণা মানুষের মধ্যে পার্থক্য করে না। জীবন
ধরনের অধিকার জীবন ভোগের অধিকার, আহারের অধিকার, বিশ্রামের অধিকার, আশ্রয়ের অধিকার, নিরাপত্তার অধিকার, বিচারের অধিকার, ভাব প্রকাশের অধিকার, চলাফেরার অধিকার, সমাবেশের
অধিকার এ সকল অধিকার মানুষ মাত্রই পাপ্য । বিশেষ মর্যাদার কারণে এই সকল অধিকারের
উদ্ভব হয় না।
মানবাধিকার কাকে বলে
মানবাধিকার বলতে বোঝায়, মানুষের অধিকার। মানুষ এবং অধিকার
শব্দদ্বয় হচ্ছে মানবাধিকারের অন্তর্নিহিত বিষয়। শব্দ দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
তাৎপর্য মণ্ডিত মানবাধিকার বলতে সেই অধিকার কে বুঝাই যা নিয়ে মানুষ জন্মায় এবং
তাকে বিশিষ্টতা দেয় এবং যা হরণ করলে সে আর মানুষ থাকে না মানুষ
জন্মসূত্রেই চিন্তা শক্তি উদ্ভাবনী ক্ষমতা এবং কথা বলার যোগ্যতা নিয়ে
আসে। সৃষ্টির সেরা মানুষ আর মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব শিখরে উঠতে দরকার
মানবাধিকার। মানবাধিকার ছাড়া মানুষের পূর্ণতা আসে না মানবাধিকার ছাড়া মানুষ
পরিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে না।
মানবাধিকারের প্রকারভেদ
মানবাধিকার সাধারণত চার প্রকার যথাঃ
- সামাজিক বা নাগরিক মানবাধিকার
- রাজনৈতিক মানবাধিকার
- অর্থনৈতিক মানবাধিকার
- সংস্কৃতিক মানবাধিকার
মানবাধিকার গুলো কি কি
মানবাধিকারগুলা হলো জাতি, লিঙ্গ, জাতীয়তা, গোষ্ঠী, ভাষা, ধর্ম বা অন্য কোন অবস্থা নির্বিশেষে সমস্ত মানুষেরই অন্তর্নিহিত অধিকার। মানবাধিকারের মধ্যে রয়েছে জীবন ও স্বাধীনতার অধিকার দাসত্ব ও নির্যাতন থেকে মুক্তি, মত প্রকাশের স্বাধীনতা কাজ ও শিক্ষার অধিকার ইত্যাদি। প্রত্যেকটি মানুষের তার প্রাপ্য অধিকার ফিরে পায়।
মানবাধিকার হলো সকল মানুষের অধিকার। ব্যক্তি, গোষ্ঠী, শ্রেণী ও দেশের অধিকার নয়।
সকল মানুষ অভিন্ন নয়, বরং প্রত্যেক মানুষই স্বতন্ত্র, কিন্তু জীবনের বৃহৎ
এলাকায় সকল মানুষ অভিন্ন এক। এই বিভিন্ন এলাকার যে কোন ধরনের বৈষম্য
মানবাধিকারের পরিপন্থী। মানবাধিকার মানুষের জীবনকে সুন্দর ও সুদৃঢ় করে তোলে।
মানবাধিকারের ধারণার মধ্যে আছে সকল মানুষের সমান অংশ। মানবাধিকার যেমন সকল মানুষের অধিকার ও তেমনি অধিকার সকলের এর সমানভাবে প্রাপ্য। রাজা-বাদশা, গুরু পুরোহিত, শিল্পপতি প্রমুখের অধিকার যতটুকু সাধারণ চাষী মজুদ দরিদ্র বেকারদের ঠিক ততটুকু অধিকার।
মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা
মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা হলঃ মানবাধিকার কমিশন ও উপ-কমিশন প্রতিবছর
প্রকাশ্য অধিবেশনে মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা লঙ্ঘনের প্রশ্নে আলোচনা করে
থাকে। বিশ্বের যেকোনো অফিসে বর্ণ বৈষম্য ও বর্ণবাদের বিষয়বস্তু আলোচনার
অন্তর্ভুক্ত। পরিস্থিতির পর্যালোর আলোকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তথ্য সন্ধানী দল
বা বিশেষজ্ঞ প্রেরণ, সরেজমিনে ঘটনা প্রবাহ জরিপ, সরকার সমূহের সঙ্গে
আলোচনা, প্রয়োজনীয় সহায়তা দান, অথবা কোন কোন ক্ষেত্রে সরকারি নিন্দা
জ্ঞাপন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদক্ষেপ নেয়া হয়।
এছাড়াও মানবাধিকার কমিশন ও তার উপকমিশন বিশেষত ব্যাপক হারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের
কার্যকারণ পরীক্ষা করে দেখেন। কার্যনির্বাহী গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দাসত্ব
বা শিশু শ্রমের মত অমানবিক আচরণ পর্যালোচনা। অপরটি বল প্রয়োগের দারুন বা ইচ্ছার
বিরুদ্ধে নিরুদ্দেশ হবার ঘটনাবলী তদন্তের উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়। নির্যাতনের ঘটনা
অনুরূপ একটি উদ্যোগ জনক বিষয়। অপরদিকে ব্যাপকহারে দেশত্যাগ এবং সংক্ষিপ্ত
দেশত্যাগ এবং সংক্ষিপ্ত ও এক তরফা বিচারে মৃত্যুদন্ড ধারনের বিষয়ে তদন্তের জন্য
বিশেষ প্রতিবেদক নিয়োগ করা হয়েছে।
মানবাধিকার প্রয়োজন কেন
জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বয়স, নারী, পুরুষ ও আর্থিক অবস্থা ভেদে বিশ্বের সব দেশের
সব মানুষেরই অধিকার রক্ষার জন্য মানবাধিকার প্রয়োজন।
মানবাধিকার বর্ণিত অধিকার ও স্বাধীনতাকে কার্যকর করতে হলে এসবের প্রতি সম্মান বৃদ্ধি করতে হবে। মানবাধিকার তথা অধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হলে সেটা মানুষের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হবে। আবার অন্যের অধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি সম্মান দেখালে মানুষের প্রতিদান দেবে অর্থাৎ নিজের অধিকার ও স্বাধীনতার সম্মানের সাথে রক্ষিত হবে।
শুধু চেষ্টাই তাকে সংরক্ষণ করা যায় না। সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমে কার্যকর করতে হয় মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি সম্মান বৃদ্ধি করতে হলে কঠোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। কঠোর প্রচেষ্টা ছাড়া রক্ষিত হতে পারে না। প্রতিকূল পরিবেশে মানবাধিকার প্রতিনিয়ত হুমকির সম্মুখীন। এমন তা অবস্থায় সতর্ক সৃষ্টি ও কথর প্রচেষ্টা ছাড়া রক্ষিত হতে পারে না। এক্ষেত্রে সহায়তা নিতে হবে শিক্ষাও অধ্যাপনার।
মানবাধিকার শিক্ষা কি
১৯৪৮ সালের সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা ২৬ ধারায় বলা হয়েছেঃ প্রত্যেকের শিক্ষা লাভ এর অধিকার আছে। শিক্ষা হবে নিখরচায়, অত্যন্ত
প্রাথমিক ও মৌলিক পর্যায়গুলোতে। প্রাথমিক শিক্ষা হবে বাধ্যতামূলক। কারিগরি ও
পেশাগত শিক্ষা সাধারণভাবে সহজলভ্য হবে এবং উচ্চ শিক্ষায় সবার অভিগম্যতা থাকবে,
যা হবে মেধার ভিত্তিতে।
মানবাধিকার শিক্ষা প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা এবং এগুলো প্রতিপালন ও উন্নতি-বিধানের যে প্রতিশ্রুতি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র সমূহ দিয়েছে সে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য দরকার মানবাধিকারের শিক্ষা।
অশিক্ষা, দারিদ্র, জুলুম, অত্যাচার, নিপীড়ন, পরিবেশ দূষণ, রোগব্যাধি ইত্যাদি
মানবাধিকারের প্রতি মারাত্মক হুমকি। এসব নির্মূল করতে না পারলে মানুষের অধিকার ও
স্বাধীনতার কার্যকর প্রতিফলন মানবাধিকারের শিক্ষা ছাড়া সম্ভব নয়। তাই
মানবাধিকারের ঘোষণা বাস্তবায়নের পথে যে সকল আর্থিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধক ও
শিক্ষা রয়েছে সেগুলো অপসারণের জন্য প্রগতিশীল কর্ম ব্যবস্থা নিতে হবে। জাতীয় ও
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এসব কর্মব্যবস্থার মাধ্যমে মানবাধিকার রক্ষার অনুকূল পরিবেশ
গড়ে তোলা সম্ভব।
মানবাধিকারের গুরুত্ব
মানুষের জীবনকে সুস্থ এবং সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য মানবাধিকারের গুরুত্ব অপরিসীম। স্থান কাল পাত্র ভেদে যে সকল অধিকারী তারতম হয় না সে সকল অধিকারী মানবাধিকার। মানুষের জীবন মৃত্যু যেমন মানুষ থেকে অবিচ্ছেদ্য তেমনি এই অধিকারগুলো অপরিহার্য এবং অবিচ্ছেদ্য। বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের চেতনা জাগ্রত হচ্ছে সক্রিয় হচ্ছে মানুষ মানবাধিকার রক্ষায় দেশে দেশে এখন গড়ে উঠেছে মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা মানবাধিকার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন কমিশন ও কমিটি ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান গোষ্ঠী রাষ্ট্র মানবাধিকারের বিষয় এখন সদা জাগ্রত হলে তাই বিশ্ব বিবেক সোচ্চার হয়ে ওঠে বর্তমানে ছাত্র-শিক্ষক, সাংবাদিক, গবেষক, বিচারক, সরকার তথা সর্বস্তরের মানুষের জন্যই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।
সার্বজনীন মানবাধিকার দিবস
সাধারণত প্রতিবছরের ১০ ডিসেম্বর সার্বজনীন মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ তার সিদ্ধান্ত নং ২১৭ এ ১১১ দ্বারা সার্বজনীন মানবাধিকার সমূহ গ্রহণ ও ঘোষণা করে।
এ ঘোষণা পত্রের শিরোনাম হচ্ছে "সার্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণাপত্র" । কেন মানবাধিকারের ঘোষণাপত্র জারি করা হলো, কি এর উদ্দেশ্য, এর প্রয়োজনীয়তাই বা কতটুকু সে বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে প্রস্তাবনায়। প্রস্তাবনায় ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করা হয়েছে এ ঘোষণার যৌক্তিকতা। সার্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণাপত্রের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন করার জন্য এ প্রস্তাব প্রস্তাবনার অবতারণা করা হয়েছে।
সর্বশেষ কথাঃ মানবাধিকার কাকে বলে - মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা - মানবাধিকারের গুরুত্ব
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আজকের পোস্টে আপনাদের জন্য সকল মানবাধিকার কি ও কেন, মানবাধিকার কাকে বলে, মানবাধিকারের প্রকারভেদ, মানবাধিকার গুলো কি কি, মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা, মানবাধিকার প্রয়োজন কেন, মানবাধিকার শিক্ষা কি, মানবাধিকারের গুরুত্ব, বিশ্বজনীন মানবাধিকার ১৯৪৮ প্রশ্নের সঠিক উত্তর সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি। আশা করি আজকের পোস্টটি পড়ে মানবাধিকার সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থেকে শেষ পর্যন্ত পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাদের অসংখ্য
ধন্যবাদ। এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url