চুল পড়া বন্ধ করার উপায় - চুল লম্বা করার উপায় - চুল ঘন করার ইসলামিক উপায়
অনেকেই চুল পড়া বন্ধ করার উপায় জানতে টাইপ করে গুগলে সার্চ করেন। ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার উপায়, পাতলা চুল ঘন করার উপায় জেনে নিন। অনেকে আছেন যারা অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায়, চুল লম্বা করার উপায় জানতে চাই ? চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে জানতে আমাদের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে করুন।
প্রতিটি মানুষ তার চুলকে পছন্দ করেন। চুল নারী বা পুরুষ উভয়ের অলংকার। বর্তমানে অনেক গবেষণা দেখা গেছে যে, দেশব্যাপী ট্রাইকোলজিস্টরা গত এক দশকে প্রায় তিনগুণ সমস্যার রোগী বেড়েছে। অপরিসন্ন আবহাওয়ার সাথে আমাদের চুল খাপ খেয়ে নেয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত কিন্তু চুলের প্রয়োজন যত্ন। তাই আপনার জন্য আমাদের আজকের এই পোস্ট। আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে চুল নিয়ে সমস্ত অনিশ্চয়তা, ভয়, উদ্বেগের সমাধান পেয়ে যাবেন।
পেজের সূচিপত্রঃ চুল পড়া বন্ধ করার উপায় - চুল লম্বা করার উপায় - চুল ঘন করার ইসলামিক উপায়
চুল কি
ছেলে ও মেয়েদের চুলের মধ্যে পার্থক্য কি
অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ
অপ্রয়োজনীয় খাদ্য অভ্যাসঃ বর্তমান যুগে আমরা বিভিন্ন ধরনের খাবারকে
থাকি বিভিন্ন খাবারের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে। যা আমাদের চুলের জন্য
ক্ষতিকর। পরিশ্রম না করে চর্বিযুক্ত খাবার খেলে মাথার চুল পড়ার বৃদ্ধি
পায়।
অ্যান্ড্রোজেনেটিক বা বংশগতঃ ছেলেদের ক্ষেত্রে বংশগত চুল
পড়ার বিপরীত হয়েছে। বিশ বছর আগে দেখা
যেত অ্যান্ড্রোজেনেটিক সমস্যার কারণে চুল পড়া দেখা যেত না। বর্তমানে
চুল পড়ার এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
রাসায়নিক ব্যবহারঃ বর্তমানে আধুনিক যুগে চুলের যত্নে বিভিন্ন কেমিক্যাল
এর মাধ্যমে তেল তৈরি করা হয়। সেই তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদের চুল
ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও এই রাসায়নিক যুক্ত তেল আমাদের মাথা ত্বকের জন্য অনেক
ক্ষতিকর। এসব তেল বেশি ব্যবহারের কারণে আমাদের শরীরের চুল পড়া বেশি দেখা
যায়।
ধূমপান করাঃ আপনার শরীরের ধূমপানের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এ কথা শোনা
যায়। কিন্তু বর্তমানে গবেষণায় দেখা গেছে যে ধূমপান করার কারণে মাথা রক্ত
চলাচলের নালী বন্ধ হয়ে যায়। ফলাফল স্বরূপ রক্তনালীর বন্ধ হওয়ার কারণে চুল
পড়া বেশি দেখা যায়।
চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
তেল ব্যবহারঃ চলে যত্নের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো তেল ব্যবহার। আমরা যদি চুল পড়া বন্ধ করতে চাই এবং চল মজবুত ও ঘন করতে চাই। তাহলে আমাদের সঠিক নিয়মে চলে তেল ব্যবহার করতে হবে তাহলে আমরা চুল পড়া বন্ধ করতে পারবো।
রাত্রি জেগে কাজ করাঃ বর্তমান বিশ্বে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের যুগে রাত্রি জাগা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাত্রি জাগার কারণে আমাদের ঘুম কম হওয়ার কারণে মাথার রক্তনালীর সমস্যা দেখা দেয়। তাই আমাদের উচিত অতিরিক্ত না রাত না জেগে থাকা।
চুল ঘন করার উপায়
মেহেদী পাতাঃ চল ঘন করতে মেহেদী পাতার গুরুত্ব অপরিসীম। চুল ঘন করতে দুই মুঠো তাজা মেহেদি পাতা পেস্ট করে সাথে দুই চামচ অলিভঅয়েল তেল মিশিয়ে বা মাখিয়ে মাথায় ভালোভাবে মাসাজ করে ১৫ থেকে ২০মিনিট রাখুন। তারপর শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার দিয়ে ভালোভাবে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই নিয়মে সপ্তাহে এক থেকে দুই বার করলে আপনার চুল অনেকটাই ঘন হয়ে যাবে, এবং মসৃণ হয়ে উঠবে।
অ্যালোভেরাঃ চুল আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। আমাদের মাথার ত্বকের চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং চুলের বিভিন্ন সমস্যা কাটাতে ডিম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। তাই প্রথমে একটি কাপে একটি ডিম ভেঙে তাতে এক চামচ অলিভ অয়েল মেশিয়ে মাথায় ভালো ভাবে মাসাজ করে দিয়ে ৩০ মিনিট ঢেকে রাখুন। কিছুক্ষণ পর শ্যাম্পু ও কমিশনার লাগিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে একবার করলে আপনার চুলের অনেক আকর্ষণীয় হবে।
মেথিঃ দুই থেকে তিন টেবিল চামচ মেথি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। অতঃপর ভেজানো মেথি হাফ কাপ পানি দিয়ে পেস্ট করুন। এবার পেস্ট করা মেথি চুলে 30 মিনিট মেসেজ করে লাগিয়ে রাখুন। তাৎক্ষণিক মাথা ভালো ভাবে শ্যাম্পু কন্ডিশনার দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তারপর থেকে আপনার চুলের বৃদ্ধি এবং খুশকি সমস্যা দূর হবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
চুল ঘন করার ইসলামিক উপায়
সূরা বাকারাহ ৭১ নাম্বার আয়াত
আয়াতটি পড়ার আগে দুরুদ শরীফ ও আউযুবিল্লাহ হিমিনাশ শাইত্বনের রজীম।, বিসমিল্লাহ হির রহমানের রহীম (সম্পূর্ণ ) পড়ে শুরু করবেন । এরপর আয়াত টি ৪১ বার পড়বেন যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে ২১ বার, সময় হাতে কম থাকলে ৫ বার সর্বনিম্ন। আয়াত পড়ার পর আবার দুরুদ শরীফ পড়বেন। পড়ে তেলে ফু দিয়ে ওইটা মাথায় লাগাতে হবে। অবশ্যই অযূ অবস্থায় থাকতে হবে।
অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
অতিরিক্ত চুল পড়া আমাদের ছেলে ও মেয়েদের উভয়ের দুশ্চিন্তার বিষয়। অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণে মাথায় সমস্যা দেখা দেয়। তাই পাতলা চুল যাদের রয়েছে তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। আমাদের ঘরে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ টি চুল পড়ে যায়। যদি স্বাভাবিকের থেকে বেশি চুল পড়ে যায় সে ক্ষেত্রে আমাদের চুল পড়া বন্ধের উপায় নিয়ে ভাবতে হবে।
তাই অতিরিক্ত চুল পড়া থেকে রক্ষা পেতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
পাতলা চুল ঘন করার উপায়
- চুলের প্রোটিনের মাত্রা বাড়ানো। ডিম চুলের জন্য প্রাকৃতিক প্রোটিন তৈরি করে। একটি ডিমের সাদা অংশ নিয়ে ভালোভাবে পেস্ট করে নিন। পরিষ্কার চুলে পেস্ট করার ডিমের অংশটি মাথায় মিশিয়ে লাগিয়ে দিন। ৩০ মিনিট পরে হালকা কুসুম গরম পানির সাথে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আপনি চুলের যতনেই দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলে চুলের ঘনত্ব ফিরে পাবেন।
- ঘন করার জন্য আরেকটি ঘরোয়া উপায় হল বিভিন্ন তেলের মিশ্রণ তিলের তেল, কাস্টর অয়েল, অলিভ অয়েল রাতে ঘুমানোর পূর্বে চুলে ব্যবহার করুন। তাহলে আপনার চুল ঘন করতে সাহায্য করবে।
- ট্রিটমেন্টের জন্য ক্রিম ব্যবহার করেন ক্রিমের সাথে মধু মিশ্রণে প্রাকৃতিক এলোভেরা মিশ্রণে চুলে ব্যবহার করলে চুলের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- চুলে পেঁয়াজের রস ব্যবহার একটি কার্যকারী সমাধান পাতলা চুল ঘন করার। সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিনবার মাথার চুল ঝরে গেছে এমন কোন ব্যক্তি পিয়াজের রস চুলে যদি ব্যবহার করে। মাথার ব্লাড সার্কুলেশন বৃদ্ধি পায় যা চুল বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ ঘন করার উপায়
ধূমপান পরিহার করাঃ অনেক ছেলেরা আছে যারা অতিরিক্ত ধূমপান করে। ধূমপান করার কারণে মাথার ব্লাড সার্কুলেশন বৃদ্ধি পায় ফলে অতিরিক্ত চুল পড়ে। তাই ছেলেদের চেষ্টা করা যাতে ধূমপান হতে বিরত থাকা যায়।
সুস্বাস্থ্য বজায় বর্জন করাঃ অতিরিক্ত ফ্যাট যুক্ত খাবার হতে বিরত থাকা। পরিমাণ মতো প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। চুলের যত্নের ভিটামিন সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের চুল পড়া বন্ধ করতে ও ঘন করতে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।
চুল লম্বা করার উপায়
- আপনি কি চুল লম্বা রাখতে চান এবং চুলের গঠন বৃদ্ধি সুন্দর রাখতে চুলে তেল দেওয়া অবশ্যক। আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা প্রতিদিন শ্যাম্পু করেন কিন্তু চুলে ঠিক মতো তেল দেন না। এটা কিন্তু মোটেও ঠিক নয়। তাই সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন চুলে তেল দিবেন এবং চল লম্বা করার জন্য শ্যাম্পু করার আধাঘন্টা আগে ব্যবহার করবেন।
- আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা চুলে গরম পানি দিয়ে থাকেন। যা মাথা স্বাস্থ্যের ও চুলের জন্য মোটেও ঠিক না। চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধির জন্য এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আপনাকে চুলে হালকা কুসুম ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে হবে। কারণ গরম পানি চুলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে যায় তাই আমাদের উচিত গরম পানি এড়িয়ে চলা।
- আবার অনেকেরই দেখা যায় চুলের আগা ফেটে যায় এবং নতুন চুলের বৃদ্ধিতে বাধা ঘটে তারা ছয় থেকে আট সপ্তাহ পর পর ডিম দিলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। এতে করে আপনার আগা ফাটা সমস্যাটি দূর হয়ে চুলের বৃদ্ধি হবে।
- আমরা যদি চুলকে সঠিক নিয়মে বৃদ্ধি ও ঝলমলে রাখতে চাই তাহলে অবশ্যই সঠিক শ্যাম্পুঁটি বেছে নিতে হবে। কারণ অনেক সময় আমাদের সঠিক শ্যাম্পু ব্যবহার না করার ফলে আমাদের চুলগুলো নষ্ট হয়ে যায়। তাই আপনি বিউটিয়ানের সাহায্য নিয়ে আপনার চুলের জন্য কোন শ্যাম্পু টি পারফেক্ট সে শ্যাম্পু টি বেছে নিয়ে আপনার চুলে ব্যবহার করতে হবে। এবং আপনার চুলকে স্বাস্থ্যও জল ঝলমলে ও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
- আমরা অনেক সময় চুলের ফ্যাশন করার জন্য অনেক কিছু ব্যবহার করে থাকি, যা মত আমাদের চুলের জন্য সঠিক নয়। তাই এগুলোকে যতই এড়িয়ে চলা যায় ততই আমাদের চুলের জন্য ভালো।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url